সাবজেক্ট রিভিউ

আইন বিষয় নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ

আইন বিষয়ে পড়াশোনা কেন করবেন?

সরকারের তিনটি সংগঠনের মধ্যে অন্যতম হলো বিচার বিভাগ আইন বিষয়। আর বিচার বিভাগের প্রাণ হচ্ছেন বিচারক ও আইনজীবীগণ। আইনের মত মহৎ পেশায় যুক্ত থেকে তাঁরা তাঁদের মেধা ও শ্রম নিয়োগ করে প্রতিনিয়ত কাজ করে যান শোষিতের পক্ষে। আত্মনিয়োগ করেন রাষ্ট্রের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়। আইন বিভাগ থেকে ডিগ্রি অর্জন করে দেশের সেবায়, সবার জন্য সুবিচার নিশ্চিতকরণে তুমিও কিন্তু বিরাট অবদান রাখতে পারো। এই বিভাগে পড়ে তুমি দেশ বিদেশের বিভিন্ন আইন, সংবিধানের নানান ধারা সম্পর্কে জানতে পারো। প্রত্যক্ষ জনসেবার পাশাপাশি দেশের আইন ও বিচার ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও ভূমিকা রাখতে পারবে তুমি।

আইন বিষয় সাবজেক্ট রিভিউ

আইন বিষয় নিয়ে কোর্স সাধারণত কত বছরের?

৪ বছরের স্নাতক এবং এক বছরের স্নাতকোত্তর। তবে কোন কোন ক্ষেত্রে এর থেকেও বেশি সময় লাগতে পারে।

 

এই সাবজেক্টটি বাংলাদেশের কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়?

পাবলিক ও প্রাইভেট মিলিয়ে প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সাবজেক্টটি পড়ানো হয়।

 

আইন বিষয় নিয়ে একাডেমি তথ্য (যেমনঃ কোর্সের বিবরণ)

 

আইন বিষয়ের সকল দিক আলোচনা করা হয়ে থাকে। এই বিষয়ের সমস্ত কোর্সই খুব বেশি গুরুত্বপূর্ন। দেশ চালনার কেন্দ্রবিন্দুতে আইনের অবস্থান তা বলে বোঝানো লাগবেনা আশা করি। সংবিধান বলেন বা বিচারব্যবস্থা সবই এই আইনের মাধ্যমেই আইনের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত।

তবুও যদি গুরুত্বপূর্ন কোর্সের কথা বলতেই হয় তবে জুরিস্প্রুডেন্স, কন্সটিটিউশনাল ল, কন্ট্রাক্ট ল, CPC, পেনাল কোড, CrPC, মুসলিম ফ্যামিলি ল, হিন্দু ও ক্রিস্টান ফ্যামিলি ল, ট্রান্সফার অফ প্রোপার্টি ল, ল্যান্ড ল, ক্রিমিনোলজি, কোম্পানি ল, মেডিকেল জুরিস্প্রুডেন্স সহ প্রায় ৫০ টির অধিক কোর্স পড়ানো হয়।

See also  অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কেন পড়বেন?

 

একজন সদ্য এইচএসসি পাস শিক্ষার্থী কিভাবে বুঝতে পারবে আইন বিষয়ে তার আগ্রহ রয়েছে কিনা?

আপনার যদি প্রশাসন, বিচার বিভাগ,বিতর্ক এসবের প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা থাকে, তাহলে আইন বিভাগ এ আপনাকে স্বাগতম।আর এছাড়া আইন মানেই বৈচিত্র্য, একটু চ্যালেঞ্জ। অতএব যারা চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করে,তাদের জন্য এটা রোমাঞ্চকর।

এ বিষয়ে পড়াশোনা করে ভালো করতে হলে এসএসসি অথবা এইচএসসি লেভেলের কোন বিষয়গুলোর উপর দক্ষতা থাকা প্রয়োজন?

উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি পাস করার পর অনান্য বিষয়ের মতো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর মেয়াদি এলএলবি (সম্মান) ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ আছে। দারুণ ব্যাপার হলো এ বিষয়ে পড়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষার্থী হওয়ার প্রয়োজন নেই। বিজ্ঞান, মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষা বা সমমানের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে এলএলবি (সম্মান) ডিগ্রি নেওয়ার জন্য ভর্তি হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী অথবা অন্য বিষয়ে অনার্স সম্পন্ন করা ব্যক্তি চাইলে যেকোনো সময় আইন কলেজে ভর্তি হয়ে ২ বছর অথবা ৩ বছর মেয়াদি এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করতে পারে।

 

আইন বিষয় নিয়ে পড়াকালীন কি কি এক্সট্রা কারিকুলার আক্টিভিটির সাথে যুক্ত থাকা যায় যা পরবর্তীতে ক্যারিয়ার গঠনে সাহায্য করবে?

আইন এ পড়াকালীন আপনি যেকোনো কো কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস এ অংশ নিতে পারেন। যেমন, মান, ওআইসি, ডিবেটিং ক্লাব, মুট কোর্ট, যা আপনার ক্যারিয়ার গঠনে সহায়ক হবে।

See also  নৃবিজ্ঞান (Anthropology) নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ

 

আইন বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত অবস্থায় কোনো ইন্টার্নশিপের সুযোগ আছে কি?

অধ্যয়নরত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন থেকে ইন্টার্নশিপ এর সুযোগ রয়েছে। তবে তাতে অর্থ বরাদ্দ খুব নগন্য।

 

আইন বিষয় নিয়ে পড়া শেষ করে কী ধরনের ক্যারিয়ার বেছে নেয়া যায় এবং জব মার্কেট কেমন?

আইনের শিক্ষার্থীর জন্য জব মার্কেট টা অনেক বেশি বড় আমি মনে করি। আইন পাস করে এডভোকেট হওয়ার পাশাপাশি একজন মানুষ চাইলে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে অর্থাৎ বার-অ্যাট- ল করে ব্যারিস্টার হতে পারেন, যা অত্যন্ত সম্মানের অথবা জুডিশিয়ারিতে পরীক্ষা দিয়ে জজ কিংবা বিচারক হয়ে কাজ করতে পারেন। এছাড়া অনেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরে কোম্পানিগুলোতে লিগ্যাল অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করে থাকেন।

BJS এর মত মূল্যবান পরীক্ষাতে শুধু আইনের শিক্ষার্থীরাই বসতে পারে, বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানিতে লিগ্যাল ম্যানেজার নামে আলাদা একটা পোস্টই থাকে যেখানে শুধু আইনের শিক্ষার্থীরাই যেতে পারে। এছাড়া তারা হতে পারে বিভিন্ন কোম্পানির লিগ্যাল এডভাইজার। এছাড়াও BCS, Bank Job সহ অন্যান্য সকল চাকরীতেও যাওয়ার সুযোগ থাকছে। আর সবচেয়ে মূল্যবান পেশা আইনজীবী হওয়ার সুযোগ শুধুমাত্র আইনের শিক্ষার্থীরাই পেয়ে থাকে।

আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হবার সুযোগ কেমন?

স্ব ডিপার্টমেন্ট এর লেকচারার হিসেবে যোগ দিতে হলে আপনাকে টপার তো হতেই হবে, পাশাপাশি থাকতে হবে আনুষঙ্গিক বিভিন্ন স্কিলস ও রেফারেন্স। দেশের প্রায় সব সরকারি- বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, আইন কলেজের পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় যোগদানের সুযোগ রয়েছে। আইনের শিক্ষার্থীদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের সংবাদ হলো বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ।

See also  ক্রিমিনোলজি নিয়ে কেন পড়বেনঃসাবজেক্ট রিভিউ

 

আইন বিষয় নিয়ে পড়াশোনা শেষে স্যালারি কেমন?

ওকালতি হলো সবচাইতে মুক্ত পেশা। আইন পেশাকে মূলত আইন ব্যবসা বলা হয়ে থাকে এবং সেই ক্ষেত্র থেকে আসলে নির্দিষ্ট কোন সেলারি বলা যায় না । একজন মানুষের কতটুকু জানেন এবং তার কর্ম দক্ষতার ওপর নির্ভর করে তিনি উপার্জন করতে পারেন অর্থাৎ ফিক্সড কোন সেলারি আসলে বলা সম্ভব নয় ।

দেশসেরা ড. কামাল হোসেন, এম আমীর-উল ইসলাম, ড. আসিফ নজরুল সহ অন্যান্য গুনীজনের দিকে তাকালেই এই ব্যাপারে কিছুটা আঁচ পাবেন। তবে মিনিমাম ৩০ হাজার থেকে স্টার্টিং ধরা যেতে পারে।

 

আইন বিষয় নিয়ে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কেমন?

দেশের বাইরে থেকে বার-এট-ল বা ব্যারিষ্টারি করার সুযোগ থাকছে। তাছাড়াও ডক্টরেট এবং চাইলে মাস্টার্স করার সুযোগও পাবেন স্বনামধন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনেক ব্যয়বহুল।

 

এই বিষয় পড়ে বাইরের কোন দেশগুলোয় যাওয়ার সুযোগ বেশি? বাইরে স্কলারশিপ পেতে হলে কি কি পন্থা অবলম্বন করতে হয়?

বাইরে স্কলারশিপ পেতে হলে একাডেমিক রেজাল্ট ভালো থাকা চাই। এল এল বি করে এল এল এম এর জন্য বাইরে যেতে পারেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইন বিভাগের প্রতিটি শিক্ষকই তিন চারটি দেশ থেকে ডিগ্রিধারী। প্রথম বর্ষের এক শিক্ষিকা কিছুদিন আগেই অক্সফোর্ড পাড়ি দিয়েছেন,এর আগে তিনি ছিলেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। এমন কি যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্য,কানাডা,অস্ট্রেলিয়া সহ নামকরা দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে রয়েছে অনেক অনেক সুযোগ।

Related Articles

Back to top button