সাবজেক্ট রিভিউ

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে কেন পড়বেনঃ সাবজেক্ট রিভিউ

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বা যোগাযোগ বৈকল্য নিয়ে কেন পড়বেন?

বিভাগের নাম হচ্ছে যোগাযোগ বৈকল্য। এটি শুনে অনেকেই ভাবে হয়তো যানজট নিয়ে কাজ। অনেকে ভাবে ICT নিয়ে। আসলে সব ভুল ধারণা। এর ডিগ্রির নাম হলো স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজি। বাইরের দেশে এটি মূলত মেডিকেলের বিষয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সামাজিক বিজ্ঞানের ভেতর। তবে পড়াশোনা মেডিকেলের মতোই। যেসব মানুষের কথা বলতে সমস্যা হয় সেসব মানুষদের থেরাপি দেয়ার মাধ্যমে তাদের সারিয়ে তোলাই স্পিচ এন্ড ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজিস্টের কাজ।

কথা বলার সমস্যার ভেতর আসলে অনেক কিছু থাকে। তোতলামি, তাড়াতাড়ি কথা বলা, তালু কাটা, কানে না শোনা কিংবা অটিজম, ডাউন সিন্ড্রোম, এফাজিয়া, ডিজার্থ্রিয়া এগুলোতে যারা আক্রান্ত তাদের নিয়েই আসলে কাজ। যারা মেডিকেলের দিকে আগ্রহী বা এসব মানুষের সাহায্য করতে চান কিংবা কোনো মহৎ পেশায় নিয়োজিত হতে চান তাদের জন্য চমৎকার বিভাগ এটি।

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস সাবজেক্ট রিভিউ

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে পড়াশোনার ধরণ

পড়াশোনা মূলত মেডিকেলের মতো। ওহ ওয়েট। ঘাবড়ানোর কিছু নাই, আবার আছে। এটা আসলে প্যাথলজির সাবজেক্ট। তাই মেডিকেলের জিনিস পড়তেই হবে। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এখানে প্রথম ২ বছর থিওরি এবং পরের দুইবছর প্র‍্যাক্টিকেল মানে হাতে কলমে পড়াশোনা। কোর্সের মধ্যে লিঙ্গুইস্টিকস এর কোর্সগুলো মানে আপনারা এডমিশনের সময় বাংলায় যে ধ্বনিতত্ত্ব, অর্থতত্ত্ব, শব্দতত্ত্ব, বাক্যতত্ত্ব পড়েছেন তারই একদম ভেতরের পড়াশোনা। সাথে কমিউনিকেশন, হিউম্যান কমিউনিকেশন, সাইকোলজি, ফিজিওলজি, এনাটমি, নিওরোলজি, অডিওলজি এসব আছে।

See also  সাইকোলজি বা মনোবিজ্ঞান নিয়ে কেন পড়বেন : সাবজেক্ট রিভিউ

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে অনার্স এবং মাস্টার্স কোর্সের সময়কাল

অনার্স ৪ বছর এবং মাস্টার্স এক বছর। আর অনার্সে ২টা প্রফেশনাল এক্সাম আছে। ২য় বছরের শেষে আর ৪র্থ বছরের শেষে।

 

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে দেশে চাকুরী এবং গবেষণা ক্ষেত্র

দেশে এই সাবজেক্ট থেকে অনার্স মাস্টার্স করে এখনো কেউ বের হয়নি। সবে মাত্র ৭ম ব্যাচ চলে। বুঝতেই পারছেন শিক্ষক হওয়ার সূযোগ ছাড়াও চাকরী ক্ষেত্র পুরোটাই ফাকা। সেই সাথে প্রতিটি হাসপাতালে সরকার থেকে স্পিচ এবং ল্যাঙ্গুয়েজ প্যাথলজির আলাদা জায়গা করা হচ্ছে। সাথে আছে নিজে থেকে প্র‍্যাক্টিসের মানে ডাক্তারদের মতো চেম্বার দেয়ার সূযোগ। আর গবেষণার জন্য আছে অনেক অনেক কিছু। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই প্রথম এই বিভাগ খুলে আমাদের দেশে। সেই সাথে সরকারি প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে।

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনের হার

এখনো আসলে ওভাবে কেউ যায়নি কারণ আগেই বলেছি আমাদের দেশে নতুন। কিন্তু ইউরোপ আমেরিকা কানাডাতে এই বিষয়টির অনেক দাম। সেখানে প্রতিটি স্কুলেই এর জন্য আলাদা পদ থাকে। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়েমা ওয়াজেদ পুতুল তো এই বিষয়ই পিএইচডি করা এবং পুরো বিশ্বেই এই নিয়ে কাজ করছেন।

See also  গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ

 

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস পাশ করতে সময় কত লাগে? সেশনজ্যাম কতটুকু?

নতুন বিভাগ দেখে একদমই সেশনজট নেই। তাই ঠিক সময়েই রেজাল্ট পেয়ে পাশ করে বের হতে কোনো অসুবিধা হবে না।

 

পরীক্ষার ফ্রিকুয়েন্সি

সেমিস্টার সিস্টেম। বছরে ২টি করে সেমিস্টার। প্রতি সেমিস্টারের মাঝে ১টি করে মিড। মানে ধরুন বছর শুরুর ৩মাস পর মিডটার্ম, ৩মাস পর সেটার সেমিস্টার ফাইনাল, এরপর ৩মাস পরে পরের সেমিস্টারের মিড আবার ৩মাস পর সেই সেমিস্টারের সেমিস্টার ফাইনাল।

 

সপ্তাহে কয় ঘন্টা ক্লাস? ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ কেমন?

সপ্তাহে ৮-৯ করে ক্লাস থাকে গড়ে। আর আপাতত ল্যাবের কোনো কাজ নেই। সেমিনার রুম আছে। সেখানে চাইলেই বই নিয়ে পড়া যায়। এই বিষয়ের বই অতোটা এভেইলেবল না বিধায় সেমিনার থেকে নিয়েই পড়তে হয়। আর যেই ২ বছর প্র‍্যাক্টিকেল সেগুলো বিভিন্ন হাসপাতালে বা স্কুলে প্রফেশনালদের আন্ডারে হয়।

 

কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস এ কতজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় প্রতি বছর?

আর্টস থেকে ২০ জন আর সায়েন্স থেকে ২০ জন।

See also  টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ

 

পার্টটাইম কাজ করার মতন ফিল্ড আছে কি?

না নেই। কারণ এখান থেকে পাশ করে এই ফিল্ডে চাকরী করার জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজন। এমনিতে চাইলে থিওরিটিকাল জায়গায় নিজ থেকে রিসার্চ করতে পারেন কিন্তু কাউকে থেরাপি দেয়া যাবে না।

 

ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দিতে গেলে পড়ালেখা কতটুকু করতে পারা যাবে?

ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দিয়েও ক্লাসের কখনো সমস্যা হয় না।

 

এই বিষয়ে পড়ে অনুষদের অন্য কোন বিষয়ে মাস্টার্স করতে পারা যাবে কী? 

অবশ্যই যাবে। লিঙ্গুইস্টিকস, সাইকোলজি এগুলো সব এই বিভাগের সাথে রিলেটেড।

 

ইয়ার সিস্টেম নাকি সেমিস্টার সিস্টেম? এটা ভাল নাকি মন্দ?

সেমিস্টার সিস্টেম। এটি অবশ্যই ভালো। শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার ভেতর থাকতে পারে।

নবাগতদের উদ্দেশ্যে কি বলার আছে?

একটাই কথা, বুঝেশুনে। বাংলা, ইংরেজি আর জিকে পড়ে তো আর মেডিকেলের পড়াশোনা করতে ডি ইউনিটে পরীক্ষা দেননি। তাই এই ব্যাপারে ভালো লাগার জায়গা না থাকলে আসবেন না। কারণ পরে বিভাগ ভালো না লাগলে যেই ডিপ্রেশনের ভেতর যাবেন সেখান থেকে উত্তরণ খুবই কঠিন। আর আগ্রহ থাকলে তো স্বাগতম। বিভাগে দেখা হবে, আড্ডা হবে, একসাথে চা খাওয়া হবে!

Related Articles

Back to top button