পদার্থ

কোন বলের সাহায্যে নিউক্লিয়াসের ভেতরে প্রোটন সমূহ একত্রে থাকে?

পরমাণুর নিউক্লিয়াসে অবস্থিত প্রোটনসমূহ সমধর্মী হওয়া সত্ত্বেও কেন বিকর্ষন করে না?

সবল নিউক্লিয় বলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রোটনসমূহ সমধর্মী হওয়া সত্ত্বের একত্রে অবস্থান করতে পারে।

আমরা এখনো,প্রকৃতির মৌলিক চারটি বলের সম্পর্কে জানতে পেরেছি,

সেগুলো হলোঃ

  1. মহাকর্ষ বল
  2. তড়িৎ-চুম্বকীয় বল
  3. সবল নিউক্লিয় বল
  4. দুর্বল নিউক্লিয় বল

 

সংক্ষেপে নিউক্লিয়াসের বলগুলো সম্পর্কে একটু জেনে নেই

  • মহাকর্ষ বলঃ ভর আছে এমন দুটি বস্তুর মধ্যে সর্বদা যে আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে।

 

  • তড়িৎ-চুম্বকীয় বলঃ আধান আছে এমন দুইটি বস্তুর মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষন বল(যদি বিপরীত আধান হয়) অথবা বিকর্ষণ বল(যদি সমধর্মী আধান হয়)

 

  • সবল নিউক্লিয় বলঃ প্রোটন ও নিউট্রেনের মধ্যে (মেসন কণার বিনিময়ে )পারস্পারিক রূপান্তরের জন্য যে আকর্ষণ বল ক্রিয়া করে।

 

  • দুর্বল নিউক্লিয় বলঃ তেজস্ক্রিয়তার জন্য বিটা রশ্মির নির্গমনে এর সাথে নিউট্রিনোর নির্গমন যে আকর্ষণ বলের জন্য হয়।
See also  আইনস্টাইন কেন বলেছিলেন ঈশ্বর পাশা খেলে না?

 

এখন, আলোচনায় আমরা দুর্বল নিউক্লিয়াসের বলকে ছেড়ে কথা বলবো।

কারণ, আমরা এখানে নিউক্লিয়াসের ভিতরের বিষয়ে আলোচনা করব। একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের উপাদানগুলোকে নিউক্লিয়ন বলা হয়ে থাকে, সাধারণ ভাবে, প্রোটন ও নিউট্রন দুইকেই নিউক্লিয়ন বলা চলে।

এখন, মূল প্রসঙ্গে আসা যাক,

 

প্রোটন

>আধান সম্পন্ন :

আধান সম্পন্ন :নিউক্লিয়াসের

 

 

>ভর সম্পন্ন :

ভর সম্পন্ন : নিউক্লিয়াসের

 

 

তাহলে, ভর থাকার জন্য দুটি প্রোটনের মধ্যে মহাকর্ষ বল(আকর্ষণ বল) ক্রিয়া করে। এবং সমধর্মী আধান থাকার জন্য তড়িৎ-চুম্বকীয় বল(বিকর্ষণ বল) ক্রিয়া করে।

এখন এই দুটি বলের মধ্যে তড়িৎ-চুম্বকীয় বল সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী , বলা চলে এর সামনে অপরটি নগণ্য, তাহলে, খুবই ক্ষুদ্র এলাকায়, অত্যাধিক বিকর্ষণ বলের জন্য, প্রোটনগুলোর এতো কাছাকাছি অবস্থান করা সম্ভব না।

কিন্তু তা হতে পারে না, এই সবল নিউক্লিয় বলের জন্য, নির্দিষ্ট মেসন কণার বিনিময়ে, চার্জহীন নিউট্রন, ধণাত্মক চার্জ সম্পন্ন প্রোটনে এবং, ধণাত্মক চার্জ সম্পন্ন প্রোটন চার্জহীন নিউট্রনে রূপান্তরিত হয়। এখন মেসন কণার আদান-প্রদানের একটা বলের সৃষ্টি হয় (যেমনঃগ্রাভিটনের জন্য মহাকর্ষ বল, ফোটনের জন্য তড়িৎচুম্বকীয় বল)। এই নতুন সৃষ্ট বলই সবল নিউক্লিয় বল, এটি একটি আকর্ষণধর্মী বল, যেখানে একটি প্রোটন একটি নিউট্রনকে আকর্ষণ করে ।

See also  শূন্য আসলে শূন্য নয়, তাহলে কি - শূন্য সম্পর্কে ধারণা নিন

এই তিনটি বলের মধ্যে আপেক্ষিক সবলতার তুলনা করলে দেখা যাবে

  1. মহাকর্ষ বল
  2. তড়িৎ- চুম্বকীয় বল
  3. সবল নিউক্লিয় বল
মহাকর্ষ বল তড়িৎ- চুম্বকীয় বল সবল নিউক্লিয় বল নিউক্লিয়াসের

অর্থাৎ, সবল নিউক্লিয় বলের সবলতা , তড়িৎ-চুম্বকীয় বলের

সবল নিউক্লিয় বলের সবলতা , তড়িৎ-চুম্বকীয় বলের নিউক্লিয়াসের

মানে সবল নিউক্লিয় বলের কাছে, তড়িৎ-চুম্বকীয় বল প্রায় নগণ্য, তাই তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকর্ষণ সবল নিউক্লিয় আকর্ষণ বলের কাছে খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে না, বিকর্ষণে অত্যাধিক দূরে সরে না গিয়ে, নিউক্লিয়াসের ক্ষুদ্রপরিসরে অবস্থান করে।

তবে, নগণ্য বললেই কোন বল হারিয়ে যায় না, এই ক্ষুদ্রতম মহাকর্ষ বলের আর এই কিছুটা ক্ষুদ্র তড়িৎ-চুম্বকীয় বলের প্রভাবে, নিউক্লিয়াসের ভিতরে নিউক্লিয়নগুলো (প্রোটন ও নিউট্রন) বিশেষ বিন্যাসে অবস্থান করে।

 

আরো সহজভাবে বলছি

বলটির নাম হচ্ছে Strong Nuclear Force/ সবল নিউক্লীয় বল,যা চারটি মৌলিক বলের মধ্যে সবচাইতে শক্তিশালী বল । এ বলই প্রোটনের ভেতরের কোয়ার্ক গুলোকে একত্রিত করে রাখে। প্রোটনগুলোর মাঝে মেসনের মধ্যস্থতায় সৃষ্ট একপ্রকার বল কাজ করে যা প্রোটনগুলোর মধ্যকার বিকর্ষণ বলকে নাকোচ করে তাদেরকে একত্রে থাকতে সাহায্য করে ।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে যে, তবে পরমানু কেনো অবাধে বড় হয় না?

See also  তেজস্ক্রিয়তা কাকে বলে ও মাদাম কুরীর পরীক্ষা

এর কারণ বিশাল বিশাল (তুলনামূলক) মেসন। আর কোন বল কোনো বড় কণা দ্বারা মধ্যস্থিত হলে এটি একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত বিপরীত বর্গ সূত্র (প্রাবল্য/বল∝১/দূরত্ব²) মেনে চলে আর সীমার বাইরে চলে গেলে খুব দ্রুত বলের পরিমাণ কমতে থাকে ।

তাই পরমাণুর অভ্যন্তরে কিছু পরিমাণ প্রোটন থাকলে সবল নিউক্লীয় বলের মেসন টপকে যায় আর পরমাণু স্থায়ী হয় আর অনেক প্রোটন থাকলে মেসন ঠিক মতোন কাজ করতে পারে না ফলে স্থির তড়িৎ বিকর্ষণ বল টপকে যায় আর পরমাণুর খন্ডন ঘটায় ।

Related Articles

Back to top button