ফলিত গণিত নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ
এপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ
ফলিত গণিত বিভাগে ১ম বর্ষে বেসিক ম্যাথের কোর্স যেমন: Calculus, Linear Algebra, Geometry ছাড়াও Statistics, Economics এবং ল্যাবসহ মোট ১১টি কোর্স পড়ানো হয়ে থাকে। একই ভাবে ২য় বর্ষেও কিছু Applied and Basic কোর্স মিলিয়ে ১১টি কোর্স পড়ানো হয়।
ফলিত গণিতের সাথে গণিতের পার্থক্য কি,সেই প্রশ্নের উত্তর ৩য় এবং ৪র্থ বর্ষের সিলেবাস দেখে অল্প কিছু ধারণা নেয়া যায়। এই দুই বছর মূলত গত দুই বছরের অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে গণিতের প্রায়োগিক দিক নিয়ে পড়ানো হয়।
উদাহরণস্বরূপ বলা যায় Mechanics, Hydrodynamics, Number Theory, Financial Mathematics, Quantum Theory, Modern Astronomy, Mathematical Neuroscience, Actuarial Mathematics সহ আরও বেশ কিছু মজার কোর্স করানো হয় এখানে।
স্কুল-কলেজের পড়াশোনার ধরন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার বেসিক পার্থক্য এখানে বই নিজ দায়িত্বে পড়ে (যদি সত্যিই শিখার ইচ্ছা থাকে!), ক্লাসে মনোযোগী হয়ে, টিচারের পরামর্শ নিয়ে, ক্লাসমেট-দের সাথে গ্রুপ ডিসকাশন এর মাধ্যমে এবং অনলাইন থেকে হেল্প নিয়ে পড়াশোনা কমপ্লিট করতে হবে।
ফলিত গণিত সাবজেক্ট রিভিউ
ফলিত গণিত এ অনার্স এবং মাস্টার্স এর সময়কাল
অনার্স ৪ বছর, মাস্টার্স ১ বছর। বছরের বিভিন্ন পরীক্ষা সময়মতো হওয়ায় বিভাগটি তুলনামূলক ফাস্ট।
ফলিত গণিত এ দেশে চাকরি এবং গবেষণাক্ষেত্র
যেহেতু এই বিভাগটি তুলনামূলকভাবে নতুন, সো এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের অন্যান্য পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার দারুণ সুযোগ রয়েছে এই বিভাগে বা এই সাবজেক্ট রিলেটেড অন্য বিভাগে। বিসিএস দেয়ার সুযোগ আছে। আছে ব্যাংকে জব করার সুযোগ। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ৫টা বছরের সময়টুকু স্কিল ডেভেলপমেন্ট এ কাজে লাগিয়ে, কিছু অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন আইটি সেক্টরে কাজ করা যেতে পারে। ম্যাটারোলজিক্যাল ফিল্ডে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
ফলিত গণিত এ উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনের হার
এই বিভাগের ১ম ব্যাচ এখন মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। (২০১৯ সালে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী) তাই বিদেশ গমনের হার না বলে বিদেশ গমনের সুযোগ নিয়ে কথা বলা যাক। দেশের বাইরে সুযোগের অভাব নেই। দেশের বাইরে মাস্টার্স করার ক্ষেত্রে ফলিত গণিত বিভাগ ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে অনেক দিকেই শিফট হওয়া সম্ভব, যেমন- থিওরেটিকাল ফিজিক্স, ইকোনমিকস, নিউরোলজি, এস্ট্রোফিজিক্স, ডেটা সাইন্স, স্পেস সাইন্স,স্ট্যাটিসটিকস ইত্যাদি। এক কথায় গণিত প্রয়োজন হওয়া প্র্যাক্টিকাল ফিল্ডের যেহেতু অভাব নাই, সেহেতু এপ্লাইড ম্যাথমেটিক্স এর কাজের ক্ষেত্রেরও অভাব নাই।
ফলিত গণিত এ পরীক্ষার ফ্রিকোয়েন্সি
এই বিভাগে ইয়ার সিস্টেম প্রচলিত। বছরে দুটো ইনকোর্স এবং একটি ফাইনাল এক্সাম হয়। ইনকোর্স গুলো উইক সিস্টেমে হয় এবং প্রায় ১ মাসের পিএল এর পর ফাইনাল প্রায় ২ মাসব্যাপি চলে এবং ২ থেকে ৫ মাসের মধ্যে রেজাল্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে। পড়াশোনা বা যেকোনো ক্রিয়েটিভ কাজের তাড়না ধরে রাখতে পারলে বছরের মাঝে পড়াশোনার চাপ যখন কম থাকে তখন নিজের মতো পড়াশোনা বা অন্যান্য কাজ করা যায়। সেই দিক বিবেচনা করলে ইয়ার সিস্টেম বেটার।
সপ্তাহে কয় ঘন্টা ক্লাস? ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ কেমন?
সপ্তাহে ২৫ ঘন্টা ক্লাস হয় ল্যাবসহ (অর্থাৎ দিনে গড়ে ৫টা ক্লাস থাকে)। প্রতি সপ্তাহে ১ দিন ২ঘন্টা করে ল্যাব ক্লাস হয়ে থাকে। ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ অনেক ভালো এখানে। শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য প্র্যাকটিস ল্যাব এর ব্যবস্থাও আছে।
কতজন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হয় প্রতি বছর?
প্রতি বছর ৭০জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়।
পার্টটাইম কাজ করার মতন ফিল্ড আছে কি?
অনলাইনভিত্তিক পাঠদানের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠছে ইদানিং, এছাড়া টিউশনি তো আছেই!
ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দিতে গেলে পড়ালেখা কতটুকু করতে পারা যাবে?
পড়াশোনাতে কনসিস্টেন্সি বজায় রেখে ক্লাব এক্টিভিটিজে সময় দেয়া কঠিন কিছু না।
এই বিষয়ে পড়ে অনুষদের অন্য কোন বিষয়ে মাস্টার্স করতে পারা যাবে কী?
যে বিষয়ে করতে চায়, সে বিষয়ে সুযোগ থাকলে, করা যাবে।
নবাগতদের উদ্দেশ্যে কি বলার আছে?
গণিতের প্রতি আগ্রহ এবং ভালোবাসা না থাকলে এই বিভাগে আসলে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হবে। তাই বিষয় বাছাই করার বিষয়ে সতর্ক হতে হবে। বিভাগটি যেহেতু নতুন ,পুরাতন এবং বড় বিভাগের তুলনায় ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় কম। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মোটামুটি প্রতিটি সিস্টেমে কিছু না কিছু ফল্ট আছে। তাই সারাদিন সিস্টেমের ফল্ট খুঁজে বের না করে, সেই প্রবলেম কিভাবে সলভেবল তা নিয়ে ভাবলে, একদিকে প্রবলেম সলভিং অ্যাবিলিটি যেমন বাড়বে তেমনই সেল্ফ ডেভেলপমেন্টও হবে। নবীনদের ফলিত গণিতের জগতে স্বাগতম!