পদার্থ

তড়িৎ বর্তনী কাকে বলে, কত প্রকার ও তড়িৎ বর্তনীর ব্যবহার

তড়িৎ বর্তনী ও বর্তনী সংযোগ সম্পর্কে বিস্তারিত

আমরা সবাই জানি, তড়িৎ বর্তনী মােবাইলকে চার্জ দেয়ার সময় কিংবা টিভি, ফ্রিজ, রেডিও, ফ্যান ইত্যাদি চালাতে হলে বিদ্যুৎ লাইনের সাথে তার (পরিবাহী) দিয়ে যুক্ত করতে হয়। এই তার দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত হয়ে যন্ত্রগুলােকে চালনা করে। মূল বিষয় হলাে, তামার তার দিয়ে সংযােগ করে তড়িৎ প্রবাহের একটি পথ করে দিই। তড়িৎ প্রবাহ চলার সম্পূর্ণ পথকে তড়িৎ বর্তনী বলে। যখন কোষ বা ব্যটারীর দুই প্রান্তে এক বা একাধিক রােধ, তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণের সাথে যুক্ত করা হয় তখন একটি তড়িৎ বর্তনী তৈরি হয়।

বর্তনী সংযোগ কত প্রকার

সাধারণত বর্তনীতে তড়িৎ যন্ত্র ও উপকরণসমূহ দুইভাবে সংযুক্ত হয়।

যথা

  • শ্রেণি সংযােগ
  • সমান্তরাল সংযােগ

 

শ্রেণি সংযোগ কাকে বলে?

তড়িৎ যন্ত্র বা উপকরণসমূহ (রােধ, চাবি, গ্যালভানােমিটার ইত্যাদি) যদি বর্তনীতে এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে, এগুলাে একটির পর একটি ধারাবাহিকভাবে সংযুক্ত থাকে অর্থাৎ প্রথমটির দ্বিতীয় প্রান্তের সাথে দ্বিতীয়টির প্রথম প্রাপ্ত, দ্বিতীয়টির দ্বিতীয় প্রাপ্ত তৃতীয়টির প্রথম প্রান্তের সাথে এভাবে যুক্ত হয়। তাহলে এ ধরনের সংযােগকে শ্রেণীবদ্ধ সংযােগ বলে। এ সংযোেগ প্রতিটি উপকরণের মধ্য দিয়ে একই প্রবাহ চলে। কি উপকরণগুলাে প্রত্যেকের দুই প্রান্তের বিভব পার্থক ভিন্ন হতে পারে।

See also  ট্রান্সফরমার কাকে বলে, কিভাবে কাজ করে ও এর ব্যবহার

শ্রেণি সংযোগ কাকে বলে?

চিত্রে দুটি বােধ (R1, R2) একটি মামমিটার, একটি ব্যাটারী ও বেশ বেশ আজমিট একটি চাবি ইত্যাদি শ্রেণী সংযােগে যুক্ত আছে। চিত্রে লক্ষ্য করুন, R1 রােধের দ্বিতীয় প্রান্ত, R2 রােধের প্রথম প্রান্তের সাথে সংযুক্ত। R1 রােধের দ্বিতীয় প্রান্ত অ্যামমিটারের প্রথম প্রান্তে, অ্যামমিটারের দ্বিতীয় প্রান্ত কোষের প্রথম প্রান্তে, কোষের দ্বিতীয় প্রান্ত চাবির প্রথম প্রান্তে পরিশেষে চাবির দ্বিতীয় সুই কোল ৪ প্রান্ত Rরােধের প্রথম প্রান্তে সংযুক্ত। যেহেতু তড়িৎ প্রবাহের পথ একটি শ্রেণি সংযােগ তাই সকল উপকরণের মধ্য দিয়ে একই I প্রবাহিত হবে। R1 ও R2 এর মান ভিন্ন হলে তাদের দু প্রান্তের বিভব পার্থক্য ভিন্ন হবে।

 

আরো সহজভাবে:

শ্রেণি সমবায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রোধের প্রান্তগুলো ভিন্ন ভিন্ন বিন্দুতে সংযুক্ত থাকায় তাদের দুই প্রান্তের মধ্যকার বিভব পার্থক্য সাধারণত এক হয় না। এখানে, বিভিন্ন তড়িৎযন্ত্রও কিন্তু একেকটি রোধ বা Resistance. একটি ধনাত্মক আধানকে তড়িেক্ষত্রের এক বিন্দু থেকে অন্য বিন্দুতে নিয়ে যেতে যে পরিমাণ কাজ করতে হয় তার পরিমাণকে ঐ দুই বিন্দুর বিভব পার্থক্য বলে।

See also  আইনস্টাইন এর গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বা কাজ সমুহ

অর্থাৎ বিভব পার্থক্য হয় দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে। সহজভাবে বলতে গেলে একাধিক রোধের প্রত্যেকটির দুটি প্রান্তবিন্দু কখনো একটি অপরটির সাথে মিলিত বা সংযুক্ত হয় না ফলে প্রত্যেকের দুটো বিন্দু আলাদা আলাদা হয়ে যায়। তাই বিভব পার্থক্যও পৃথক পৃথক হয়ে যায়।

কিন্তু রোধের সমান্তরাল সমবায়ের ক্ষেত্রে সবগুলো রোধের এক প্রান্ত বর্তনীর একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে এবং অপর প্রান্ত অন্য একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে। সমান্তরাল সমবায়ে যেহেতু রোধগুলো দুইটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে সংযুক্ত থাকে, তাই তাদের প্রত্যেকটির দুই প্রান্তের মধ্যে বিভব পার্থক্য একই থাকে।

 

সমান্তরাল সংযােগ কাকে বলে?

যে বর্তনীতে তড়িৎ উপকরণগুলো এমনভাবে সাজানো থাকে যে প্রত্যেকটির এক প্রান্তগুলো একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপরপ্রান্তগুলো অন্য একটি সাধারণ বিন্দুতে সংযুক্ত থাকে তবে তাকে সমান্তরাল বর্তনী বলে। সমান্তরাল বর্তনীতে একাধিক পথ থাকায় প্রত্যেক পথ দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ চলে।

কোনাে বর্তনীতে দুই বা ততােধিক উপকরণ বা যন্ত্র (রােধ, চাবি, ভােল্টমিটার ইত্যাদি) এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে, প্রতিটির এক প্রান্ত একটি সাধারণ বিন্দুতে এবং অপর প্রান্ত অন্য একটি সাধারণ বিন্দুতে যুক্ত হয়। তবে সেই সংযােগকে সমাপ্তিরাল সংযােগ বলে।

See also  চল তড়িৎ বা Current Electricity নিয়ে কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

 

সমান্তরাল সংযােগ কাকে বলে?

 

চিত্রে দুটি রােধ ও একটি ভােল্টমিটারের সমান্তরাল সংযােগ দেখানাে হয়েছে। চিত্রে লক্ষ্য করুন R1 ও R2 রােধের দ্বিতীয় বা বামপ্রান্ত একত্রে P বিন্দুতে এবং প্রথম প্রান্ত বা ডান প্রান্ত একত্রে Q বিন্দুতে যুক্ত আছে। যেহেতু বােধ দুটি সমান্তরাল সমবায়ে সংযুক্ত সেহেতু এদের বিভব পার্থক সমান হবে। P বিন্দুতে আসা তড়িৎ প্রবাহ বিভক্ত হয়ে R1 এর মধ্য দিয়ে I1 এবং R2 এর মধ্য দিয়ে হয়ে পুনরায় Q বিন্দুতে একত্রিত হয়ে I2 তড়িৎ প্রবাহ হবে।

 

শ্রেণি বর্তনী ও সমান্তরাল বর্তনীর পার্থক্য কি কি?

শ্রেণী বর্তনীতে বিভিন্ন রোধের প্রান্তবিন্দু বিভিন্ন স্থানে সংযুক্ত থাকে,কিন্তু সমান্তরালে সবকটির প্রান্তবিন্দু একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মিলিত হয়।

কোনোরূপ বদল না আনলে শ্রেনী বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ অপরিবর্তিত থাকে,আর সমান্তরালে বিভব পার্থক্যের মানের কোনোরূপ পরিবর্তন হয় না।

 

তড়িৎ বর্তনীর বিভিন্ন উপকরন ও প্রতিকের ব্যবহার

তরিৎ বর্তনীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রংশ ও প্রতিক নিম্নে দেয়া হল।

Related Articles

Back to top button