পদার্থ

আলফা রশ্মি কাকে বলে ও আলফা রশ্মির ধর্ম?

আলফা রশ্মি (Alpha Ray) কাকে বলে?

আলফা রশ্মি বা আলফা কণা আসলে একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস। একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসে থাকে দুটো প্রােটন এবং দুটো নিউট্রন, কাজেই এটি একটি চার্জযুক্ত কণা। সে কারণে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বক ক্ষেত্র দিয়ে এর গতিপথকে প্রভাবিত করা যায়। একটা নিউক্লিয়াসের ভেতর থেকে যখন একটা আলফা কণা বের হয়ে আসে তখন তার শক্তি থাকে কয়েক MeV, কাজেই সেটি যখন বাতাসের ভেতর দিয়ে যায় তখন বাতাসের অণু-পরমাণুর সাথে সংঘর্ষ করে সেগুলােকে তীব্রভাবে আয়নিত করতে পারে। বাতাসে আলফা কণার গতিপথ হয় সরলরেখার মতাে, এটা সােজা এগিয়ে যায়। তবে আলফা কণা যেহেতু হিলিয়ামের নিউক্লিয়াস তাই এটা পদার্থের ভেতর দিয়ে বেশি দূর যেতে পারে

বাতাসের ভেতর দিয়ে 6 cm যেতে না যেতেই এটা বাতাসের অণু-পরমাণুকে তীব্রভাবে আয়নিত করে তার পুরাে শক্তি ক্ষয় করে থেমে যায়। একটা কাগজ দিয়েই আলফা কণাকে থামিয়ে দেওয়া যায়। জিংক সালফাইড পর্দায় এটি প্রতিভা (phosphorescence) সৃষ্টি করে। আলফা কণা যাত্রাপথে অসংখ্য অণু-পরমাণুকে আয়নিত করে মুক্ত ইলেকট্রন তৈরি করে সেগুলােকে সংগ্রহ করে সহজেই তার উপস্থিতি নির্ণয় করা যায় কিংবা তার শক্তি পরিমাপ করা যায়।

See also  আইনস্টাইন এর গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার বা কাজ সমুহ

আলফা কণা যেহেতু দুটি প্রােটন এবং দুটি নিউট্রন দিয়ে তৈরি তাই যখন একটি নিউক্লিয়াসের ভেতর থেকে বের হয়ে আসে, তখন সেই নিউক্লিয়াসের পারমাণবিক সংখ্যা কমে দুই ঘর এবং নিউক্লিওন ও সংখ্যা কমে চার ঘর।

যেমন:

ইউরেনিয়ামের একটি আইসােটোপ আলফা কণা বিকিরণ করে থারিয়ামের একটি আইসােটোপে পরিণত হয়।

ইউরেনিয়ামের একটি আইসােটোপ আলফা কণা বিকিরণ করে থারিয়ামের একটি আইসােটোপে পরিণত হয়।

ইউরেনিয়ামের পারমাণবিক সংখ্যা  92 থােরিয়ামের ৩০, এখানে উল্লেখ্য, পরমাণুর ইলেকট্রন সংখ্যাটি এখানে ধর্তব্যের মাঝে নয়, তেজস্ক্রিয় নিউক্লিয়াসের পরমাণু সহজেই তার চারপাশের পরিবেশে বাড়তি ইলেকট্রন ছেড়ে দিতে পারে, কিংবা গ্রহণ করতে পারে।

 

আলফা রশ্মি খুব বেশি আয়নিত করে শক্তি ক্ষয় করতে পারে বলে একটা কাগজের পৃষ্ঠা দিয়েই এটাকে থামানাে সম্ভব।
চিত্র : আলফা রশ্মি খুব বেশি আয়নিত করে শক্তি ক্ষয় করতে পারে বলে একটা কাগজের পৃষ্ঠা দিয়েই এটাকে থামানাে সম্ভব।

 

আলফা রশ্মি এর ধর্ম :

    1. আলফা রশি ধনাত্মক আধানযুক্ত। এর আধান 3.2×10-19c
    2. এ রশি চৌম্বক ও তড়িৎক্ষেত্র দ্বারা বিচ্যুত হয়।
    3. এ রশি তীব্র আয়নায়ন সৃষ্টি করতে পারে।
    4. এর ভর বেশি হওয়ায় ভেদন ক্ষমতা কম।
    5. সাধারণ চাপ ও তাপমাত্রার কয়েক সেন্টিমিটার বায়ু বা ধাতুর খুব পাতলা পাত দ্বারা এর গতি থামিয়ে দেওয়া যায়।
    6. একণা ফটোগ্রাফিক প্লেটে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
    7. এ রশি জিসালফাইড পর্দায় প্রতিশ্রতা সৃষ্টি করতে পারে।
    8. একণা প্রচণ্ড বেগে নির্গত হয়।
    9. এটি একটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াস।
    10. এ কণার ভর হাইড্রোজেন পরমাণুর চারগুণ।
See also  আধান বা চার্জ (charge) কি?

Related Articles

Back to top button