চাকরির প্রস্তুতি

ব্যাংক ভাইভায় কেমন ড্রেস পড়বেনঃ ব্যাংক ভাইভার প্রস্তুতি

ব্যাংক ভাইভায় কেমন পোশাক পড়বেন এবং ব্যাংক ভাইভার ড্রেস কোড

চাকরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে ব্যাংক ভাইভা। ভাইভাতে নিজের যোগ্যতা, বিচক্ষণতা, উপস্থিত বুদ্ধি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ও নিজেকে উপস্থাপনের দক্ষতা যাচাই করা হয়। কিন্তু ভাইভার এ অল্প সময়ে কিভাবে নিজেকে প্রদর্শন করবেন তা আপনার উপরই নির্ভর করে।

অন্যদিকে শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি আচার আচরণ, পরিচ্ছন্নতা, চিন্তা-ভাবনা, পোশাক এবং চরিত্র ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভাইভার পোশাক কেমন হওয়া উচিত তা নিয়েই আমাদের এ আয়োজন।

(বাংলাদেশ ব্যাংকে কয়েকটা ভাইভা অভিজ্ঞতার আলোকে যা যা মনে আসলো লিখলাম)

ব্যাংক ভাইভায় ছেলেদের পোশাক

০১। ছেলেরা ফুলহাতা শার্ট পড়বেন। সাদা রঙের শার্ট সবচেয়ে বেশি মার্জিত। অন্য রঙের শার্টও পড়তে পারেন ( তবে হালকা রঙের)। প্যান্টের ক্ষেত্রে, অবশ্যই ফরমাল প্যান্ট পড়বেন। প্যান্টের রঙ কালোটাই বেশি মানানসই। এবং শার্ট ও প্যান্টের সঙ্গে মানানসই টাই পড়বেন।

০২। গরমে কোট পড়া নিয়ে অনেকেরই বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে, সেক্ষেত্রে মানানসই রঙের কোট পড়লে ভালো ( ভাইভা কক্ষে এসি থাকে) , না পড়লে সমস্যা নেই। তবে টাই অবশ্যই পড়বেন।

See also  বাংলাদেশ ব্যাংক এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদের প্রস্তুতি

০৩। সু (জুতার) ক্ষেত্রে স্টাইলিশ সু পছন্দ না করাই ভালো। ফরমাল সু পছন্দের ক্ষেত্রে কালো রঙের সু পড়বেন। কোমরের বেল্ট ও সু ম্যাচিং করে পড়বেন। সু (জুতা) কালো হলে বেল্টও কালো পড়বেন।

০৪। মাথার চুল ২/৩ দিন আগেই সেলুনথেকে কেটে ছোট করে নিবেন। দাঁড়ি সেভ করে যাবেন। আর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দাঁড়ি রাখলে ভালো কথা। কিন্তু দাঁড়ির কোনো স্টাইল করা যাবে না। আর ফরমাল ঘড়ি পরবেন।হাতের নখ ছোট রাখবেন।

 

ব্যাংক ভাইভায় মেয়েদের পোশাক

০১। মেয়েরা শাড়ী অথবা থ্রী পিস পড়তে পারেন৷ তবে শাড়ী পড়াই ভালো। থ্রী পিস পড়লেও সমস্যা নেই তবে জামার কালার যাতে হালকা হয় এবং শাড়ীর কালার হালকা গোলাপী বা নীল রঙ এর বেছে নিতে পারেন। অন্য কালার হলেও বেশি গরজিয়াস যাতে না হয়।

০২। হাত ঘড়ি পড়বেন। নখে নেইল পলিস ব্যবহার না করাই ভালো। হাতের নখ ছোট রাখবেন। এবং শাড়ীর সাথে ম্যাচ করে কানের হালকা কানের দুল পড়বেন।

০৪। সু (জুতার) এর ক্ষেত্রে মেয়েরা শাড়ী বা থ্রী পিসের সাথে মানানসই জুতা পড়বেন। তবে হাই হিল না পড়াই ভালো।

See also  Introduce Yourself । ভাইভা বোর্ডে কিভাবে নিজেকে Introduce করবেন?

ব্যাংক ভাইভায় করণীয় এবং বর্জনীয়

০১। ভাইভা হলো প্রার্থীর সঙ্গে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের একটি আনুষ্ঠানিক মৌখিক আলোচনা মাত্র। তাই আর দশটা আলাপচারিতার মতোই এটাকে বিবেচনা করুন এবং চাপমুক্ত থাকুন।

০২। ভাইভার আগের রাতে যেন পর্যাপ্ত ঘুম হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

০৩। ভাইভার আগের দিনই দরকারি কাগজপত্র গুছিয়ে রাখুন।

০৪। ছেলেরা স্যুট-টাইসহ সম্পূর্ণ অফিশিয়াল ড্রেস পরার চেষ্টা করুন। মেয়েরা মার্জিত ডিজাইনের শাড়ি বা থ্রিপিস পরুন। অতিরিক্ত অলংকার ও মেকআপ পরিহার করুন।

০৫। ভাইভা বোর্ডের কক্ষে প্রবেশের আগে স্যারদের অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করুন। কাছাকাছি গিয়ে স্বাভাবিক শব্দে (খুব উচ্চ শব্দে নয়) সালাম দিন, অনুমতি দেওয়ার পর বসুন অথবা কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পরও বসতে না বললে বসার জন্য অনুমতি চাইবেন এবং বসার পর ধন্যবাদ জানান। কাত হয়ে, হেলে পড়ে, নুইয়ে বা রোবটিক ভঙ্গিতে বসবেন না; একজন ব্যাংক কর্মকর্তা তাঁর গ্রাহকের সামনে যেভাবে চেয়ারে বসা উচিত ঠিক সেভাবে বসুন।

০৬। পুরো প্রশ্ন শোনার পর উত্তর দেওয়া শুরু করুন। যিনি প্রশ্ন করবেন তাঁর দিকে চোখ রাখুন। বাংলায় প্রশ্ন করা হলে বাংলায়ই উত্তর দিন। আর ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলে ইংরেজিতেই জবাব দেওয়ার চেষ্টা করুন।

See also  কিভাবে ভাইভার প্রস্তুতি নিবেনঃ চাকরির ভাইভা টিপস

০৭। উত্তর দেওয়ার সময় কৌশলী হোন। কারণ আপনার দেওয়া উত্তরের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রশ্ন করা হতে পারে। আন্দাজে উত্তর দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

০৮। কোনো প্রশ্নের উত্তরে যতটুকু জানা আছে ততটুকুই বলুন। কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে আদবের সঙ্গে বলুন, ‘স্যরি স্যার, এ ব্যাপারটা আমার জানা নেই। ’

০৯। আপনার দেওয়া সঠিক উত্তরও যদি ভাইভা বোর্ডে সঠিক বলে গ্রহণ করা না হয়, তবে বিনয়ের সঙ্গে মেনে নিন এবং বলুন, ‘স্যরি স্যার, আমি এতটুকুই জানতাম। ’

১০। কোন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম জানতে চাইলে উক্ত নামের পূর্বে জনাব বা মাননীয় (যে যে ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য) এসব উল্লেখপূর্বক পূর্ণ/অফিশিয়াল নাম উল্লেখ করুন।

১১। তাড়াহুড়ার দরকার নেই। খুব জোরে বা আস্তে নয়, স্বাভাবিক ভঙ্গিতে কথা বলুন।

১২। ভাইভা শেষে সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সালাম দিয়ে কক্ষ ত্যাগ করুন।

 

ব্যাংক ভাইভায় যে বিষয় খায়াল রাখবেন

সাজগোজের ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্য চুল ছোট এবং পরিপাটির বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। অন্যদিকে মেয়েদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মেক আপ না নেওয়াই উত্তম। চাকরির ইন্টারভিউতে যতটা সম্ভব সজীব, পরিচ্ছন্ন ও স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করুন।

Related Articles

Back to top button