ব্লগ

আমি অনলাইনে আমার ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখবো

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক। আশা করি আপনি অনেক ভালো আছেন। আবারও আপনাদের সামনে নতুন একটি টিউটোরিয়াল নিয়ে হাজির হলাম। বর্তমান সময়ে আমরা এখন অনলাইন মুখী হয়ে গেছে। আমাদের জীবনের যেকোনো কাজ খুব অল্প সময়ে অনলাইনে সাহায্য করে থাকি। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আমাদের জীবন অনেক সহজ হয়ে গেছে। আপনি যদি অনলাইনে এসে অনুসন্ধান করে থাকেন আমি অনলাইনে আমার ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখবো এই নিয়ে তবে সঠিক জায়গায় এসেছেন। চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড একটি নাগরিকের পরিচয় পত্র। একজন ব্যক্তির যখন ১৮ বছর পূর্ণ হয়। তখন তাকে দেশের নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়। একজন নাগরিকের প্রথম পরিচয় পত্র তার জাতীয় পরিচয় পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড। ভোটার আইডি কার্ড একটি জাতীয় সম্পদ।

আমাদের শিক্ষাজীবন থেকে শুরু করে পেশাগত সকল ক্ষেত্রেই ভোটার আইডি কার্ড অনেক অপরিহার্য একটি সনদ। আজকে মূলত আমরা আপনি অনলাইনের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখবেন তা নিয়ে আলোচনা করব। আমি অনলাইনে আমার ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখবো চলুন বিস্তারিত আলোচনা করি।

ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম

আপনি যখন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করবেন। দীর্ঘ পাঁচ থেকে ছয় মাস পর আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন হয়ে যাবে। অর্থাৎ আপনি ভোটার হওয়ার ছয় মাসের মধ্যেই আপনার অনলাইন ভোটার আইডি কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন। এজন্য অবশ্যই অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করে নিতে হবে।

আপনার ভোটার আইডি কার্ড যদি অনলাইন হয়ে থাকে। তাহলে খুব সহজে অনলাইন থেকে ডাউনলোড করে নিয়ে প্রয়োজনীয় সকল কাজের জমা দিতে পারবেন। আজকে মূলত আমরা অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম কানুন সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার জন্য আপনাকে অনেকগুলো ধাপ সম্পন্ন করতে হবে। নিচে আমরা সহজ ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছি। আশা করি,মনোযোগ সহকারে পড়বেন।

ধাপ ১.

প্রথমে আপনাকে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করতে হবে। তারপর সার্চ করুন NID Card Check সর্বপ্রথম যে ওয়েবসাইটে আসবে সেই ওয়েবসাইটের হিসাব করুন। অথবা এই services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে ক্লিক করুন।

এখন আপনার সামনে নতুন একটি ওয়েবসাইট চলে আসবে। যেহেতু এখানে আপনার কোন অ্যাকাউন্ট তৈরি করা নেই। সেইজন্য আপনাকে রেজিস্টার অপশনে ক্লিক করতে হবে।

রেজিস্টার অপশনে ক্লিক করার পর, আপনার সামনে তিনটি বক্স চলে আসবে। মূলত এই তিনটি বক্স আপনাকে পূরণ করতে হবে।

প্রথম বক্সে আপনাকে স্লিপ নাম্বার দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যখন ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন তখন আপনাকে একটি ফর্ম দেওয়া হয়। সেই ফর্মে থাকা নয় সংখ্যার একটি স্লিপ নাম্বার আছে। সেই নম্বর আপনাকে তুলতে হবে।

দ্বিতীয় বক্সে আপনার জন্ম তারিখ মাস ও সাল তুলতে হবে। সঠিকভাবে জন্ম তারিখ তোলার পর তৃতীয় বক্সে আপনাকে একটি ক্যাপচা পূরণ করতে হবে। তিনটি বক্স সুন্দর ভাবে ফিলাপ করার পর, পুনরায় আপনাকে রিভাইস দিতে হবে সঠিক আছে কিনা।

যদি আপনার সকল তথ্য সঠিক থাকে তাহলে এখন সাবমিট বাড়ানোর ক্লিক করুন। সাবমিট কারণে ক্লিক করার পর আপনাকে যদি পরবর্তী পেজে নিয়ে আসে। তাহলে আপনার সকল তথ্য ঠিক আছে। আর যদি পরবর্তী পেজে না নিয়ে যায়, তাহলে আপনার কোন তথ্য নিশ্চয়ই ভুল রয়েছে। সেই ভুলগুলো সংশোধন করে তুলনায় আবার চেষ্টা করেন।

ধাপ ২.

তিনটি বক্স সঠিকভাবে ফিলাপ করার পর, সাবমিট বাটনে ক্লিক করতে হবে। এখন আপনাকে নতুন আরেকটি পেজে নিয়ে আসবে। এই ধাপের কাজ হল আপনাকে বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা বেছে নিতে হবে।

আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এক হয়,তাহলে একই ঠিকানা দুইবার বসাবেন। আবার আপনার বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা যদি আলাদা আলাদা হয়, তাহলে যেভাবে ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করার সময় দিয়েছেন সেই রকম ভাবে দিতে হবে। তারপর পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন‌। আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা যদি সঠিক থাকে তাহলে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে।

ধাপ ৩. 

তৃতীয় ধাপে আপনাকে মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করতে হবে। আপনি ভোটার আবেদন ফরমে যে নাম্বার দিয়েছিলেন, সেই নাম্বারে একটি এসএমএস যাবে। সেই কোড নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করতে হবে। আপনার যদি সেই নাম্বার সচল থাকে, তাহলে বার্তা পাঠান অপশনে ক্লিক করুন। আবার যদি নাম্বার পরিবর্তন করতে চান, তাহলে মোবাইল পরিবর্তন অপশনে ক্লিক করুন।

 বার্তা পাঠান অপশনে ক্লিক করার পর, আপনার মোবাইল নাম্বারে নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে একটি ভেরিফিকেশন কোড যাবে। তারপর আপনাকে সেই কোড নাম্বার দিয়ে ভেরিফাই করতে হবে।

ধাপ ৪.

মোবাইল নাম্বার ভেরিফাই করা শেষ হলে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ফেইজ ভেরিফিকেশন করা। এই কাজটি করার জন্য আপনাকে একটি অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটল করতে হবে। এজন্য আপনি গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল করুন।

NID Wallet অ্যাপ ইন্সটল করার পর,আপনি ভোটার আইডি কার্ড রেজিস্ট্রেশন করার যে ধাপে ছিলেন। সেখানে লাল বাটনে ক্লিক করবেন। যাতে লেখা রয়েছে Tap to open NID Wallet ক্লিক করার পর,আপনি আপনার ইন্সটল করা অ্যাপ নিচে দেখবেন ক্লিক করার সাথে সাথে ভেরিফাই করার জন্য অপশন পেয়ে যাবেন।

এখন আপনার সামনে ফেইস ভেরিফাই করার অপশন চলে আসবে। যে ব্যক্তির ভোটার আইডি কার্ড তার সামনে, বামে ও ডানে তাকিয়ে তিনটি স্টেপ ভেরিফাই করতে হবে। ভেরিফাই করা শেষ হলে একটি টিক চিহ্ন উঠবে। ভেরিফাই করা শেষ হবার পর আপনাকে আবার এনআইডি কার্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে নিয়ে যাবে।

ধাপ ৫.

ফেইস ভেরিফাই করা শেষ আপনাকে প্রফাইল পিকচার ও বাকি ভোটার তথ্য দেখতে পারবেন। এখন একটি পাসওয়ার্ড সেটাপ করতে বলবে চাইলে আপনি পাসওয়ার্ড দিতেও পারেন আবার চাইলে না দিতে পারেন। তবে আপনি যদি পাসওয়ার্ড দেন তাহলে পরবর্তীতে সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করতে পারবেন। তাই আমি বলব আপনি একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিন।

পরবর্তী ধাপে আপনি যদি পাসওয়ার্ড সেটাপ করতে চান, তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার আর আপনার দেওয়া পাসওয়ার্ড দিয়ে পরের ধাপে যাবেন। আবার যদি চান এড়িয়ে যেতে পারেন। এখন আপনার সামনে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করুন একটি অপশন আসবে। ডাউনলোডে ক্লিক করলে আপনার আইডি কার্ড ডাউনলোড হয়ে যাবে।

এখন আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রটি ডাউনলোড করার পর,একটি কম্পিউটার থেকে প্রিন্ট করে নিতে পারলে। আপনার প্রয়োজনীয় সকল কাজ অনলাইন কপি দিয়ে করতে পারবেন। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলন থেকে শুরু করে স্কুল কলেজে ভর্তি হওয়ার সকল কাজে এই অনলাইন ভোটার আইডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে।

ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে

ভোটার আইডি কার্ডের আপনি যদি আসল কপি হাতে পেতে চান। তাহলে অবশ্যই আপনাকে সর্বনিম্ন এক থেকে দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে। কারণ একটি নির্দিষ্ট সময় ছাড়া জাতীয় পরিচয়পত্রের আসল কপি বিতরণ করা হয় না। তবে আপনি ইচ্ছা করলে ভোটার হওয়ার তিন মাসের মধ্যে অনলাইন জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পেতে পারেন। উপরে উল্লেখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজে মোবাইলের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করতে পারবেন।

উপসংহার

এই ছিল আজকে আমি অনলাইনে আমার ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে দেখবো তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আপনাদের সামনে খুবই সহজ ভাবে অনলাইন থেকে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম বর্ণনা করেছি। এছাড়াও ভোটার আইডি কার্ড চেক করার পর কিভাবে ডাউনলোড করবেন সেটা আপনাদের সুন্দরভাবে বুঝিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও যদি বুঝতে কোন সমস্যা হয় তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

Back to top button