ডায়োড এবং রেকটিফায়ার কি, কিভাবে কাজ করে?
ডায়োড কিভাবে রেকটিফায়ার হিসেবে কাজ করে
ডায়োডকে রেক্টিফায়ার বলার কারণ কি? এই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে জেনে নেয়া দরকার ডায়োড এবং রেকটিফায়ার কি?
তাহলে চলুন জেনে নিই ডায়োড এবং রেকটিফায়ার কি?
ডায়োড কাকে বলে?
ডায়োড হচ্ছে একটি দুইপ্রান্তবিশিষ্ট সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যা ফরওয়ার্ড বায়াসের সময় বিদ্যুৎ প্রবাহিত করে এবং রিভার্স বায়াসের সময় বিদ্যুৎ প্রবাহকে বাঁধা দেয়।
যেমন: জেনার ডায়োড। ডায়োড মূলত সুইচিং সার্কিট,ক্লিপার,ক্লাম্পার ইত্যাদিতে এ ব্যবহৃত হয়।
বর্তমান টেকনোলজিতে বহুল ব্যবহৃত কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ “ডাই” এবং “ইলেকট্রোড” এর সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ডায়োড।
তড়িৎ প্রবাহকে একটি নিদিষ্ট দিকে ধাবিত করার জন্য যে ইলেক্টিক ডিভাইজ ব্যবহৃত হয় তাকে ডায়োড বলে । এটি বিপরীত দিকের তড়িৎ প্রবাহকে বাধা প্রদান করে থাকে।
আরোস্পষ্ট ভাষায় বলা যায় ডায়োড হল দুই টার্মিনাল বিশিষ্ট একটি বশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক সেমিকন্ডাক্টর ডিভাইস যাতে একক ক্রিস্টালে নির্মিত একটি পিএন জংশন থাকে । এবং যা একমূখি কারেন্ট প্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে । এককথায় একটি পিএন জংশনকেই সেমিকন্ডাক্টর ডায়োড বা ক্রিস্টাল ডায়োড বলা হয় ।
ডায়োড কত প্রকার?
ডায়োড বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে তার মধ্যে ইলেকট্রনিক্স সার্কিটে যে সকল ডায়োডের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো :
- জেনার ডায়োড ( Zenar Diode)
- লাইট ইমিটিং ডায়োড (সংক্ষেপে এলইডি)
- সেভেন সেগমেন্ট ডায়োড (এলইডি ডিসপ্লে)
- ফটো ডায়োড (আলোর প্রতিফলনে কাজ করে)
- টানেল ডায়োড (Tunnel Diode)
- ভ্যারাক্টর ডায়োড (Varactor Diode)
- স্কটকি ডায়োড (Schottky Diode)
- ভ্যারিষ্টার ডায়োড (Barrister Diode)
ব্যবহারের দিক থেকে ডায়োড প্রধানত দুই প্রকার।
- অন গেইট
- নট গেইট
একটি ডায়োডের এক প্রান্ত অন গেইট এবং অপর প্রান্ত নট গেইট ।
রেকটিফায়ার কাকে বলে?
রেকটিফায়ার হচ্ছে এমন এক ডিভাইস যা AC সিগনালকে DC সিগনালে রূপান্তরিত করে। আমরা যেসকল চার্জার এর মাধ্যমে আমাদের মোবাইল ফোনকে চার্জ দিয়ে থাকি তার পেছনে রয়েছে রেকটিফায়ারের অবদান। রেকটিফায়ার হচ্ছে একটি সার্কিট যা গঠিত হয় ডায়োড,স্টেপডাউন ট্রান্সফরমার,ফিল্টার সার্কিট দিয়ে এবং এরা একসাথে কাজ করে AC সিগনালকে DC সিগনালে কনভার্ট করে।
অর্থাৎ, কোন সার্কিটে রেকটিফায়ার, ইনপুটে এসি ভোল্টেজ দিলে আউটপুটে পালসেটিং ডিসি ভোল্টেজ পাওয়া যায়। আর যে পদ্ধতিতে এসি কে ডিসি তে রূপান্তর করা হয় সে পদ্ধতি কে রেকটিফিকেশন বলে।
রেকটিফায়ার কত প্রকার?
প্রধানত দুই প্রকার যথা:
- হাভ ওয়েভ রেকটিফায়ার
- ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার
হাভ ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ যে রেকটিফায়ার সার্কিট এসির হাফ সাইকেল ডিসিতে রূপান্তর করে ।
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ারঃ যে রেকটিফায়ার সার্কিট এসির পূর্ণ সাইকেল ডিসিতে রূপান্তর করে ।
ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার আবার দুই প্রকারঃ
- সেন্টার টেপ-ফুল ওয়েভ রেকটিফায়ার
- ফুল-ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ার।
ফুল-ওয়েভ ব্রিজ রেকটিফায়ারঃ যে সার্কিটের মাধ্যমে চারটি ডায়োড ব্যবহার করে এসির পূর্ণ সাইকেলকে ডিসিতে রূপান্তর করে তাকে ব্রিজ ওয়েভ রেকটিফায়ার বলে।
আর যেহেতু ডায়োড কারেন্টকে একদিকে প্রবাহিত করতে সাহায্য করে। তাই AC থেকে DC সিগনালে কনভার্ট করতে ডায়োড অন্যতম ভুমিকা পালন করে। অর্থাৎ ডায়োড রেকটিফায়ারের মতো কাজ করে। তাই ডায়োডকে প্রায়ই রেকটিফায়ার বলা হয়।