সাবজেক্ট রিভিউ

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস (International Business) নিয়ে কেন পড়বেন?

International Business বা আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিষয়টা কেমনঃসাবজেক্ট রিভিউ

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের প্রতিষ্ঠাকাল ৮ নভেম্বর ২০০৭। সাফল্যের ১২ টি বছর অতিক্রম করে পদার্পন করতে যাচ্ছে ১৩ তম বছরে। অপেক্ষারত নতুনদের উদ্দেশ্যে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস। বর্তমান এই তথ্যের দুনিয়ায় আমরা আন্তর্জাতিক ব্যবসা সম্পর্কে সবাই কমবেশি জানি। সাথে সাথে জানি এর গুরুত্বের কথাও।

এই বিশেষায়িত ডিপার্টমেন্টটি ২০০৭ সালে সময়ের প্রয়োজনেই খোলা হয়েছিলো। বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের যুগে নিজের দেশকে বিশ্বের কাতারে শামিল করার জন্য দরকার গ্লোবালাইজেশন এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায় এর উপর বিশেষায়িত জ্ঞানে গুণসম্পন্ন মানবসম্পদ। তারই প্রেক্ষিতে আমাদের “ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস” ডিপার্টমেন্টের সূচনা। আসুন আমাদের বিভাগের কিছু বিশেষ তথ্য জেনে নিই।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের অনার্স চার বছর ও মাস্টার্স ১ বছরের। এই বিভাগ বিভিন্ন ধরণের কোর্স অফার করে যার কারণে এই বিভাগ থেকে পড়াশোনা করে প্রচুর চাকরির ক্ষেত্র পাওয়া যায়।

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সাবজেক্ট রিভিউ

যা যা পড়ানো হয় এবং চাকরিতে কতটুকু সহায়ক পড়াশোনা

মূলত বিজনেসের কোর কোর্সগুলো যেমন- মার্কেটিং, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, ই বিজনেস, বিজনেস ম্যাথ এবং একই সাথে এপ্লাইড কোর্সেস- ইকোনোমেট্রিক্স, অপারেশন্স রিসার্চ, অপারেশন ম্যানেজমেন্ট, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট পড়ানো হয়ে থাকে এই বিভাগে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা কোর কোর্সগুলোর সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন কোর্স ইন্টারন্যাশনাল ফিনান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট, ইন্টারন্যাশনাল মারকেটিং, ইন্টারন্যাশনাল এন্ট্রিপ্রেনিউরশিপ, ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংকিং, ফরেইন এক্সচেঞ্জ, রেগুলেটরি এনভায়রনমেন্ট, করপোরেট গভার্নেন্স ইত্যাদি নিয়েও পড়াশোনা করে।

See also  টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কেন পড়বেন: সাবজেক্ট রিভিউ

সুতরাং বিভিন্ন ধরণের চাকরিতে যোগ দেওয়ার সুযোগ থাকে। এই বিভাগ থেকে পড়ে বের হওয়া শিক্ষার্থীরা এমএনসি, বিভিন্ন বড় বড় ব্যাংক, সরকারি সংস্থা সহ নানা জায়গায় কাজ করছে। গবেষণার সুযোগও আছে প্রচুর।

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী 

দুই সেকশনে প্রত্যেক বছর ১৩০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়। বিভাগের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বেশ ভালো ভালো পাবলিকেশন আছে। বিভাগের অনেক শিক্ষক, যারা এই বিভাগেরই ছাত্র ছিলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চতর পড়াশোনা শেষ করে বিভাগে জয়েন করেছেন। শুধু শিক্ষকরাই নন, এই বিভাগের শিক্ষার্থীরাও উল্লেখযোগ্য হারে বিদেশে পড়াশোনা করতে যান।

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেসে সেশনজ্যাম, সেমিস্টার ও পরীক্ষা কেমন?

বিভাগটিতে কোনো সেশন জ্যাম নেই। বছরে দুটি সেমিস্টার, প্রত্যেক সেমিস্টারে দুটি মিড টার্ম পরীক্ষা এবং একটি ফাইনাল পরীক্ষা হয়। প্রত্যেক সেমিস্টারে পাঁচটি করে কোর্স পড়ানো হয়। সপ্তাহে প্রত্যেক কোর্সের দুটি করে ক্লাস থাকে। সাধারণ সপ্তাহে চারদিন বা পাঁচদিন ক্লাস হয়। তবে এটি খুব নির্ধারিত কিছু না।

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস এ পার্ট টাইম কাজের সুযোগ কেমন?

এ বিষয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। অনেকটাই স্কিল ডেভেলপমেন্টের ওপর নির্ভর করে।

See also  কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কেন পড়বেন:সাবজেক্ট রিভিউ

 

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিষয়ে পড়াশোনা ও সহ-শিক্ষা কার্যক্রম

কেউ যদি এই বিভাগ থেকে ভালো রেজাল্ট করতে চায়, তাহলে তাকে অবশ্যই ভালোমতো পড়াশোনা করতে হবে। তাই বলে সে সহপাঠের জন্য সময় পাবে না তা নয়। অনেক শিক্ষার্থীই বিভিন্ন ধরণের কাজের সাথে যুক্ত আছে। সর্বোপরি সময় ম্যানেজমেন্ট জানাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক ব্যবসায় বিভাগে পড়ে ক্যারিয়ার কেমন হবে?

১। দেশকে এগিয়ে নেয়ার জন্য Economic Diplomacy দরকার অনেক বেশী। সেক্ষেত্রে প্রশাসন বা ফরেন ক্যাডারে জয়েন করে আপনি Economic Diplomacy তে বেশী ভ্যালু এড করতে পারবেন।

২। সরকারী-বেসরকারী যে কোন Procurement এ আপনি আলাদা ভ্যালু এড করতে পারেন।

৩। দুই দেশের যত বাণিজ্য চুক্তি হয়ে থাকে সেখানে ভ্যালু এড করতে পারেন। মোটকথা যেখানেই দুই দেশের মধ্যে কোন বিজনেস ইস্যু থাকবে সেখানেই আপনার আলাদাভাবে অবদান রাখার সুযোগ আছে।

৪। দেশের মধ্যে অবশ্যই export Import oriented ফার্মে আপনার আলাদাভাবে ভ্যালু এড করার সুযোগ আছে।

৫। মাল্টিন্যালশনাল ফার্মের কালচার আয়ত্ত করা আপনার জন্য অনেক সহজ হবে। সেক্ষত্রে MNC তে আপনার একটা আলাদা সুবিধা থাকছে।

See also  কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস নিয়ে কেন পড়বেনঃ সাবজেক্ট রিভিউ

৬। C & F agent এ কাজ করার সুযোগ আছে।

৭। আর আপনার নিজেকে অন্য দেশে এক্সপোর্ট করার সুযোগ তো থাকছেই।

৮। যে কোন International Non-governmental or International Body তে আপনি আলাদাভাবে অবদান রাখতে পারেন।

৯। পরিবেশের ভিন্নতা, মানুষের আচরণ ভিন্নতা এবং দেশের ভিন্নতা নিয়ে এই সাবজেক্টে অনেক ডিটেইলস পড়ানো হয়। এই বিষয়গুলো আপনাকে যে কোনো ব্যবসায়ের Business Advisor, Business Analysts, Management Consultant হতে অনেক বেশী সাহায্য করবে। আপনার মধ্যে একটা গ্লোবাল মাইন্ড সেট তৈরী করবে যা আপনাকে আউট অফ বক্সে গিয়ে চ্যালেঞ্জ নিতে সাহায্য করবে।

১০। উদ্যাক্তা হতে হলে নতুন নতুন বিজনেস এর সুযোগ খুজে নিয়ে আসতে হয়। বুঝতেই পারছেন আইবি তে পড়লে উদ্যাক্তা হওয়ার গুণাবলীগুলো আপনার মধ্যে অনেকাংশই জন্ম নিবে। এই ১১ বছরের জার্নিতে আমাদের অনেক সিনিয়র বড় ভাই উদ্যাক্তা হিসাবে ইতিমধ্যে নিজের আসন মার্কেটে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।

এভাবে সরকারী বেসরকারী দেশী বিদেশী অনেক ফার্মে আপনি আলাদাভাবে ভ্যালু এড করতে পারেন। গতানুগতিক ব্যাংক জব ছাড়াও আর কোথায় কোথায় এই ডিপার্টমেন্টে পড়ার কারণে অগ্রাধিকার পাবেন? ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিপার্টমেন্টে কাজ করতে গেলে আপনি নানানভাবে শুরু থেকেই ভ্যালু এড করতে পারবেন।

 

Related Articles

Back to top button